সিলেটে কিশোরীকে গণধর্ষণ ৪০ ঘন্টায় মূল হোতা গ্রেফতার


সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় আলোচিত গণধর্ষণের ঘটনা নিষ্পত্তি করে ধর্ষকদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর সিলেটের পুলিশ সুপারের নির্দেশে ধর্ষক ও ধর্ষণকারীদের রক্ষায় তৎপরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।

একই সঙ্গে অভিযান চালিয়ে গণধর্ষণের ঘটনার মূলহোতাকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি ধর্ষকদের রক্ষা ও আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।


জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি এবং সহকারী মিডিয়া কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতার মিজান গণধর্ষণের কথা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। বুধবার বিকেল ৩টার দিকে তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবে মিজান।

বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বনাথ উপজেলার মাহতাবপুর এলাকার এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয়। ৪০ ঘণ্টা সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে গণধর্ষণের ঘটনার মূলহোতা মিজানকে (২০) সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়ন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মিজান বিশ্বনাথ উপজেলার বশিরপুর গ্রামের আশিক মিয়ার ছেলে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ দল পাথারিয়ায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।


পুলিশ জানায়, গত ২৫ মে মধ্যরাতে মিজান ও তার সহযোগীরা প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার পর আসামি পক্ষের লোকজন ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা ঘটনাটি দফারফার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের কাছে এ ঘটনার সংবাদ আসে। তখন তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. লুৎফর রহমানের মাধ্যমে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন তিনি। পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার মূলহোতা মিজানকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়।

কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশকে বেগ পেতে হয়। ৮ জুলাই বিশ্বনাথে মিজানের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। তবে আসামির আত্মীয়-স্বজন পুলিশের অভিযানে বাধা দিয়ে আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১৩ জুলাই সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়ায় ৪০ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে মিজানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, গণধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধ সালিশ-বৈঠকে মীমাংসার কোনো সুযোগ নেই। এ ঘটনায় জড়িত ধর্ষক ও আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে একটা বার্তা দিতে চাই, ভবিষ্যতে এমন ঘৃণ্য অপরাধীদের আশ্রয় দিলে তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।

তিনি বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম ৪০ ঘণ্টার বেশি সময় অভিযান চালিয়ে গণধর্ষণের ঘটনার মূলহোতাকে গ্রেফতার করে। অন্যদেরও গ্রেফতার করা হবে।

কোন মন্তব্য নেই

sndr থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.